প্রাইম ব্যাংক – ব্রি প্রথম জাতীয় বায়োক্যাম্প ২০১৫: জীববিজ্ঞানের চার দিন

সেই ২০১২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরে বাংলাদেশের প্রথম আঞ্চলিক জীববিজ্ঞান উৎসবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের পথচলা শুরু। তারই ধারাবাহিকতায় এবছর ২৭ মার্চ শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় দেশের প্রথম জাতীয় জীববিজ্ঞান উৎসব। সেই উৎসব ও অলিম্পিয়াড হতে নির্বাচিত ৩৭ জন ক্ষুদে জীববিজ্ঞানীকে নিয়ে বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের আয়োজনে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটে (ব্রি) গত ৩ – ৬ সেপ্টেম্বর চার দিন ধরে সম্পন্ন হলো প্রাইম ব্যাংক – ব্রি প্রথম জাতীয় বায়োক্যাম্প ২০১৫। ক্যাম্পটি অর্থায়ন করে প্রাইম ব্যাংক। ভেন্যু হিসেবে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট প্রশিক্ষণার্থী এবং আয়োজকদের খাদ্য, আবাসন, মিলনায়তন এবং ল্যাব সুবিধা নিশ্চিত করে। এতে সার্বিক সহায়তা প্রদান করে ব্রি উচ্চ বিদ্যালয় এবং মুদ্রণসহ কারিগরি সহায়তা দেয় ল্যাব বাংলা।

 

প্রথম দিন: বিজ্ঞানীদের সান্নিধ্যে

যদিও রেজিস্ট্রেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল বিকাল তিনটা থেকে তবু ৩ সেপ্টেম্বর দুপুর দেড়টা থেকেই বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটে শুরু হয়ে যায় ক্ষুদে জীববিজ্ঞানীদের পদচারণা। সেদিন বিকাল পাঁচটা থেকে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত প্রাণবন্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে প্রশিক্ষণার্থীদেরকে অনুপ্রাণিত করেন ব্রি’র মহাপরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস সহ উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রথিতযশা বিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলেন, সতের কোটি মানুষের এই ছোট্ট দেশটি যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা পেয়েছে তা জীববিজ্ঞানের অবদান – এটা মনে রাখতে হবে। জীববিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে কী করে মানবজাতির বিভিন্ন ধরণের সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে, সেটিও আলোচনা করেন তাঁরা। অনুষ্ঠানের অন্যতম অতিথি প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং জয়দেবপুর চৌরাস্তা শাখার প্রধান মোল্লা ফরিদ আহমেদ তাঁর বক্তব্যে বিভিন্ন প্রকার শিক্ষণ কার্যক্রম বেগবান করার লক্ষ্যে প্রাইম ব্যাংকের দায়বদ্ধতা এবং স্বতঃস্ফূর্ত সম্পৃক্ততার বিষয়টি তুলে ধরেন।

 

দ্বিতীয় দিন: হাতে-কলমে গবেষণাগারে

তার পরদিন খুব সকাল থেকে শুরু হয়ে যায় একের পর এক ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বা মডিউল। ব্রি’র গ্রেইন কোয়ালিটি এন্ড নিউট্রিশন বিভাগের গবেষণাগারে উক্ত বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং বিভাগীয় প্রধান ড. মুহাম্মদ আলী সিদ্দিকীর তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণার্থীরা মেতে ওঠেন প্রাণরাসায়নিক নানা বিক্রিয়ার সুলুক সন্ধানে। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের রেসিডেন্ট ডা: সৌমিত্র চক্রবর্তী ও ল্যাব টেকনোলজিস্ট মুসা মৃধা শিক্ষার্থীদের দেখান কী করে নিজের আঙুল থেকে এক ফোঁটা রক্ত নিয়ে সেটি অনুবীক্ষণ যন্ত্রে পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণ করতে হয়। অনেক শিক্ষার্থী নিজের রক্ত থেকে নিজে নিজে প্রস্তুত করা স্লাইড নিজের কাছে রেখে দেন ক্যাম্পের সুভ্যেনির হিসেবে! পাশাপাশি ব্রি’র হাইব্রিড বিভাগের পক্ষ থেকে দেখানো হয় কীভাবে ধানের সতেজ ও নিস্তেজ রেণুর মধ্যে পার্থক্য করতে হয়। নিজ হাতে ধানের রেণুর স্লাইড প্রস্তুত করে তা অনুবীক্ষণে দেখেন প্রশিক্ষণার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত প্রশিক্ষক আব্দুল্লাহ, প্রশিক্ষণার্থীদের দেখান কেমন করে ফুল ব্যবচ্ছেদ ও পর্যবেক্ষণ করে পুষ্প সংকেত নির্ণয় করতে হয়। এদেশের শিক্ষার্থীরা সাধারণত এর সবই মুখস্থ করে অভ্যস্ত, তাই হাতে-কলমে পরীক্ষণগুলো করে দেখার সুযোগ পেয়ে তাদের উৎসাহের কমতি ছিল না। সকালে গবেষণাগারে যেসব প্রাণরাসায়নিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেখানো হয়েছিল বিকালে সেগুলো নিয়ে সম্পূরক আলোচনা করেন এবং শিক্ষার্থীদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন ব্রিটিশ বায়োলজি অলিম্পিয়াড ও যুক্তরাজ্যের রয়্যাল সোসাইটি অব বায়োলজির সদস্য স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক সামিউল আলম রাজিব এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক কাজী সাইফুল ইসলাম। প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন ব্রি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আখের আলী দেওয়ান, সহকারী প্রধান শিক্ষক জীবন চন্দ্র দাস এবং জীববিজ্ঞান শিক্ষক মোর্শেদুজ্জামান আরাফাত সহ স্কুলের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং কর্মচারীবৃন্দ। ক্রমে দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে। এবার দৈনিক মূল্যায়নের পালা। প্রশিক্ষণার্থীরা সারাদিনে যা কিছু শিখলেন তার উপরেই অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের অনুরূপ ব্যবহারিক পরীক্ষা নেওয়া হয়, যার নাম OSPE (Objective Structured Practical Exam)। পরীক্ষাটিতে প্রশিক্ষণার্থীদের ব্যবহারিক জ্ঞান ও দক্ষতা এমনভাবে যাচাই করা হয় যেখানে মুখস্ত করে কোনো বাড়তি সুবিধা লাভ করা সম্ভব নয়, বরং এতে ভালো করতে হলে বিষয়গুলো বোঝাটা জরুরি। সারাদিন এতো এতো মডিউল-ক্লাস-পরীক্ষার পরও দেখা গেল প্রশিক্ষণার্থী এবং এনজাইম (জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের স্বেচ্ছাসেবক) – কেউই ক্লান্ত হননি! পরীক্ষার একটু বাদেই সবাই মিলে শুরু করেন নাচ-গান-কৌতুক-অভিনয়-আবৃত্তি। আরিফ, রিয়াদ (১ ও ২), তারিক, সুলগনা, আসাদ, সাইফুল্লাহ, রায়ান, আইরিন, রাজ, সোহাগ, সানি, কুটুম প্রমুখ এনজাইম এভাবেই মাতিয়ে রাখেন ক্যাম্পের পরিবেশ। প্রশিক্ষণার্থী ক্ষুদে জীববিজ্ঞানীরা যে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও কম যান না, তা বলা বাহুল্য!

 

তৃতীয় দিন: প্রকৃতির কাছাকাছি

দ্বিতীয় দিনের মডিউলগুলো ছিল মূলত গবেষণাগারের চারদেয়ালে বন্দী। তৃতীয় দিনের যাবতীয় কাজকর্ম মাঠ পর্যায়ে। এইদিন সকালে প্রথম মডিউলটি ছিল প্রাণি ও উদ্ভিদ সনাক্তকরণ এবং শ্রেণিবিন্যাস সংক্রান্ত। মো: আলিমুল রাজি রাজের (শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়) তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণার্থীরা চলে যান ব্রি’র ধানক্ষেতে। সেখানে তারা সরাসরি ধানগাছের নানা বৈশিষ্ট্য দেখেন যা এতোদিন কেবল বইতেই পড়েছেন। এভাবে ব্রি’র বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে নানা ধরণের উদ্ভিদের সাথে হাতে-কলমে পরিচয় ঘটে প্রশিক্ষণার্থীদের। তারপর ধানের বিভিন্ন প্রকার পোকা জীবন্ত অবস্থায় সরাসরি ধান গাছ থেকে বের করে দেখিয়ে প্রশিক্ষণার্থীদের অবাক করে দেন ব্রি’র কীটতত্ত্ব বিভাগের মো: মোফাজ্জেল হোসেন। তিনি এসব পোকার নানা গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য দেখান এবং বর্ণনা করেন। এরপর ব্রি’র পরিচালক (গবেষণা) এই প্রতিষ্ঠানের গবেষণা ও সাফল্যের চিত্র তুলে ধরেন। অতঃপর জমি থেকে জীবন্ত শামুক এবং কেঁচো সংগ্রহ করে প্রশিক্ষণার্থীদেরকে দেখানো হয়। এই প্রাণিগুলোর বৈশিষ্ট্য এবং শ্রেণিকরণ সম্পর্কে বাস্তব পরিচয় ঘটানোর দুরূহ কাজটি করেন গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের প্রাণিবিজ্ঞান শিক্ষক মো: শহীদ উল্লাহ। তিনি আরও একটি প্রাণির শ্রেণি সম্পর্কে তুলনামূলক আলোচনা করেন – সেই প্রাণির নাম মানুষ এবং শ্রেণি Mammalia. শ্রেণিবিভাগ করার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, এটি ছাড়া পৃথিবীর যাবতীয় জীব সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব নয়। প্রাণির বৈশিষ্ট্য এবং শ্রেণিবিভাগ সম্পর্কে পরিচিত হওয়ার পর এবার তাদের আচার-ব্যবহার সম্পর্কে জানার পালা। প্রাণির বিভিন্ন প্রকার আচরণ, যেমন: ইনস্টিংক্ট, ট্যাক্সিস, রিফ্লেক্স ইত্যাদি সম্পর্ক প্রাণবন্ত আলোচনা করেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের প্রধান ডা: বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। এসব আচরণের বৈজ্ঞানিক ও ব্যবহারিক গুরুত্বও তুলে ধরেন তিনি। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয়। হঠাৎ বৃষ্টিতে মাঠ পর্যায়ের প্রশিক্ষণে ক্ষণিকের ছেদ পড়ে। এই ফাঁকে রুমে গিয়ে একটুখানি ঘুমিয়ে নেন প্রশিক্ষণার্থীরা। বৃষ্টি থামলে প্রশিক্ষণের বাকি অংশ সম্পন্ন করতে মাঠে নেমে পড়েন তারা। এ পর্যায়ে তাদেরকে চারটি দলে ভাগ করে ব্রি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের জমিতে একটি বিশেষ প্রজাতির মোট কতগুলো ঘাস আছে তা গুণতে বলা হয়! শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও এই ধরণের গণনা বাস্তুতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ এবং পরিবেশ ও কৃষি-সংক্রান্ত গবেষণার একটি অপরিহার্য অংশ। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কীভাবে এই অসম্ভব গণনা সম্ভব করতে হয় তা হাতে-কলমে দেখিয়ে দেন ডা: সৌমিত্র চক্রবর্তী এবং তিনজন এনজাইম (মুসা, জিহাদ এবং মাসুম)। ঘাস গণনা শেষে ক্লাসরুমে এসে ডা: সৌমিত্র চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে পরিসংখ্যানগত পদ্ধতি প্রয়োগ করার কৌশল রপ্ত করেন প্রশিক্ষণার্থীরা, যার মাধ্যমে ওই গণনা থেকে বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। প্রশিক্ষণের এই দুই দিন প্রায় পুরোটা সময় ক্যামেরার পেছনে থেকে ক্লান্তিহীনভাবে চিত্রধারণ করেন সামিউল আলম রাজিব এবং তানভির। দিনের শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের পরীক্ষা নিয়ে আবার মূল্যায়ন করা হয় সারাদিনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। এবার QR (Quick Response) পদ্ধতিতে। এটিও অডিও-ভিজ্যুয়াল প্রযুক্তি-নির্ভর একটি অত্যাধুনিক পরীক্ষা পদ্ধতি। তারপর আবার আগের রাতের মতো বসে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। ঘরের ভেতরে যখন চলছে মানবীয় সঙ্গীত তখন বাইরে থেকে এর সাথে যোগ হয় ব্রি’র স্থায়ী বাসিন্দা শেয়ালদের সুমধুর সঙ্গীতচর্চা! সেই সঙ্গীতের সাথে প্রতিযোগিতায় ইতিমধ্যেই স্বেচ্ছাসেবক মোহতারেমা হোসেন কুটুম-এর কুখ্যাত অ্যালার্ম বিখ্যাত হয়ে গেছে যেটি ব্যবহার করে তিনি যথাসময়ে প্রশিক্ষণার্থীদের ঘুম ভাঙিয়ে থাকেন।

 

চতুর্থ ও শেষ দিন: বিদায় বন্ধু বিদায়

সকাল আটটা নাগাদ ব্রি মিলনায়তন পূর্ণ হয়ে যায় অতিথি, প্রশিক্ষণার্থী, অভিভাবক এবং এনজাইমদের মুখর পদচারণায়। বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের সাধারণ সম্পাদক ডা: সৌমিত্র চক্রবর্তীর উপস্থাপনায় সমাপনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস, পরিচালক (গবেষণা) ড. মো: আনসার আলী, পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) ড. মো: শাহজাহান কবীর, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ কামাল খান চৌধুরী এবং ব্রি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আখের আলী দেওয়ান। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের সভাপতি এবং শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: শহীদুর রশীদ ভুঁইয়া ২০১৫ সালে ডেনমার্কের আর্হাস শহরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রথমবারের মতো পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। সাথে প্রদর্শিত হয় সেই অলিম্পিয়াডে তোলা বিভিন্ন ছবি। উল্লেখ্য, উক্ত আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ এবং নিবন্ধন সংক্রান্ত যাবতীয় আর্থিক সহায়তা আসে প্রাইম ব্যাংকের পক্ষ থেকে। এই পর্বের পর অতিথিবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। তাঁরা প্রশিক্ষণার্থী এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানান ক্যাম্পটি সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য। তাঁরা আরও বলেন, জীববিজ্ঞানের সমৃদ্ধতর গবেষণার মাধ্যমে আগামী দিনে দেশ ও পৃথিবীর হাল ধরতে হবে এবং এই বায়োক্যাম্প তারই প্রস্তুতি। অতিথিদের বক্তৃতার পর সভাপতি তাঁদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন। প্রশিক্ষণার্থীদেরকে কিছু কথা বলার জন্য মঞ্চে দাঁড়িয়ে বাষ্পরুদ্ধ হয়ে যান বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের সহকারী সাধারণ সম্পাদক অনিরুদ্ধ প্রামাণিক। এই চার দিনে প্রশিক্ষণার্থী এবং এনজাইমদের মধ্যে যে মায়ার বাঁধন গড়ে উঠেছে, এ যেন তারই বহিঃপ্রকাশ। এমন আবেগঘন পরিবেশে বক্তব্য দেওয়ার জন্য আহ্বান করা হয় বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: শহীদুর রশীদ ভুঁইয়াকে। তিনি প্রশিক্ষণার্থীকে অনুপ্রাণিত করেন জীববিজ্ঞান চর্চাকে আরও বহুদূর নিয়ে যাওয়ার জন্য। সবশেষে ফলাফল ঘোষণা ও পুরষ্কার বিতরণ। প্রশিক্ষণার্থীরা গত দুই দিনে যে দুটি মূল্যায়ন পরীক্ষা দিয়েছেন তার ভিত্তিতে এই ফলাফল প্রস্তুত করা হয়। অনুষ্ঠানের এই অংশটি উপস্থাপনা করেন সামিউল আলম রাজিব। পুরষ্কার বিতরণের পর ব্রি মিলনায়তনে এক অম্লমধুর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে একদিকে যেমন বাড়ি ফেরার আনন্দ, অন্যদিকে তেমন নতুন-পাওয়া বন্ধুদের ছেড়ে যাওয়ার বেদনা।

 

বিজয়ী হলেন যারা

মাস্টার ক্যাম্পার পুরষ্কার পান ক্যাম্পে অংশ নেওয়া পাঁচজন শিক্ষার্থী: এস এফ এক্স গ্রিন হেরাল্ড স্কুলের নাফিজ ইশমাম আহমেদ, হলিক্রস কলেজের আদিবা শায়রা, স্কলাস্টিকার ওয়াসি রহমান চৌধুরী, ভিকারুন্নেসা স্কুল এন্ড কলেজের সালসাবিল আশরাফ ভূমিকা এবং ফারজানা খান। তাঁরা ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিতব্য দ্বিতীয় জাতীয় বায়োক্যাম্পে সরাসরি অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবেন, যেখান থেকে নির্বাচিত অনধিক চার জনকে আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড ২০১৬ তে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিযোগিতা করার জন্য ভিয়েতনামে পাঠানো হবে।

 

ওয়েবসাইট: www.bdbo.org

ফেসবুক গ্রুপ: www.facebook.com/groups/bdbo.mail